বৈষম্যের শিকার কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা: সরকারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি- আলাউল হোসেন

আলাউল হোসেন

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক গত ১৭ জুলাই জারি করা দুটি পরিপত্র সারা দেশের কিন্ডারগার্টেন উদ্যোক্তা, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। একটি পরিপত্রে বলা হয়েছে, প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কেবল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিটিআই সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাই অংশ নিতে পারবে। কিন্ডারগার্টেন এবং বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই পরীক্ষা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। একই দিনে জারি করা আরেকটি পরিপত্রে সারা দেশের পরীক্ষার্থী ও কেন্দ্রের সংখ্যা জানতে চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালকদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত দেশের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক কিন্ডারগার্টেন পরিবারে ১০ লাখ শিক্ষক এবং এক কোটির বেশি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।

২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা চালুর পর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ২০২২ সালে এটি পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। পরবর্তীতে বিকল্প হিসেবে মেধাবৃত্তি এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি চালু রাখা হয়। দীর্ঘদিন পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আবারও এই বৃত্তি পরীক্ষা চালু করতে যাচ্ছে, যার সম্ভাব্য তারিখ আগামী ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর। এই পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, প্রাথমিক গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান (একসঙ্গে) এই চারটি বিষয়ের উপর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে এই পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্তটি কেবল বৈষম্যমূলকই নয়, বরং সরকারের ‘সবার জন্য শিক্ষা’ নীতির পরিপন্থী।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইকবাল বাহার চৌধুরী এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে কোনো প্রকারের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নিতে দেওয়া হবে না। তিনি এটিকে বৈষম্যবিরোধী সরকার ও দেশকে বেকায়দায় ফেলার কৌশল হিসেবে একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন। তার হুঁশিয়ারি, দেশে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক কিন্ডারগার্টেন পরিবারে যে ১০ লাখ শিক্ষক এবং ১ কোটির বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে, তাদের বাদ দিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হলে বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। বাংলাদেশ বেসরকারি স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের মহাসচিব আব্দুল অদুদও যৌথ বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং সারাদেশে কিন্ডারগার্টেনগুলোকে সাথে নিয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছেন। জেলা পর্যায়েও কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনগুলোর নেতৃবৃন্দ ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন।

এই প্রতিবাদগুলো মোটেও অযৌক্তিক নয়। কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ গত ৪ জুন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা: বিধান রঞ্জন রায় এবং সচিব মাসুদ রানার সঙ্গে সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। আলোচনাকালে উপদেষ্টা এবং সচিব উভয়েই নেতৃবৃন্দকে বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগদানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু দেড় মাসের ব্যবধানে এই নীতি নির্ধারকদের এমন সিদ্ধান্তে কিন্ডারগার্টেন স্কুল শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মিজানুর রহমান সরকার উল্লেখ করেছেন, ২০০৯ সাল থেকে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। তার মতে, শিক্ষা শিশুদের মৌলিক অধিকার এবং কোনো শিশুকে তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা কারোরই কাম্য নয়। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বর্তমান বৈষম্যবিরোধী সরকারে কিন্ডারগার্টেনের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার সেই বৈষম্যের শিকার হোক, এটা প্রত্যাশিত নয়। তাই তিনি অবিলম্বে অধিদপ্তরের এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে চলতি বছর থেকে পুনরায় অনুষ্ঠিতব্য বৃত্তি পরীক্ষাসহ প্রাথমিক শিক্ষার জন্য গৃহীত অন্যান্য যেকোনো কার্যক্রমে প্রাথমিক শিক্ষায় অংশীজন হিসেবে কিন্ডারগার্টেনের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যেন সমান সুযোগ পায়, তার প্রতি সদয় দৃষ্টিদানের বিশেষ অনুরোধ জানান।

একজন শিক্ষাকর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকার কিন্ডারগার্টেন বন্ধ করতে চায় না। তবে দেশের অধিকাংশ কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধনহীনভাবে চলছে। দেশের সব কিন্ডারগার্টেনকে নিবন্ধন ও শিক্ষাবিষয়ক স্বীকৃতির আওতায় আনার প্রচেষ্টা সরকারের দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন সময়ে পরিপত্র জারি করে স্কুল নিবন্ধনের তাগিদ দিলেও বাস্তব কোনো অগ্রগতি নেই। বেশিরভাগ কিন্ডারগার্টেন মালিক স্কুল নিবন্ধন করতে চান না। এ কারণেই এবার কর্তৃপক্ষ একটু কঠোর পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। যদিও এই যুক্তির পেছনে একটি নীতিগত অবস্থান থাকতে পারে, তবে বাস্তবতা বিবেচনায় এই কঠোরতা আত্মঘাতী হতে পারে।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, জনগণও কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হোক তা চায় না। এর কারণ হলো, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা দেশের বিপুল জনসংখ্যার তুলনায় খুবই সীমিত। দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী কিন্ডারগার্টেনে লেখাপড়া করে, যারা সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায় না। তাই কিন্ডারগার্টেনের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যায় না। সারা দেশের বেশিরভাগ সচেতন অভিভাবকের সন্তান কিন্ডারগার্টেন স্কুলে পড়ে। এমনকি দেশের আমলা-নীতি নির্ধারকদের সন্তানেরাও কেউ সন্তানকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ান না। তাছাড়া, কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হলে সারা দেশের কোটি শিক্ষার্থীর জায়গা কি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দিতে পারবে? এই প্রশ্ন এখন অনেকেরই। তবুও যখন বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে, তখন এই সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলেই দাবি করছেন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক-অভিভাবক সকলেই।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন সময়ে ‘বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিবন্ধন বিধিমালা’ নামে কিন্ডারগার্টেন স্কুল রেজিস্ট্রশনের জন্য তাগিদ দিয়ে পরিপত্র প্রকাশ করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালে জারীকৃত পরিপত্র অনুযায়ী দেশের প্রায় ১ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুল পাঠদানের অনুমতি/রেজিস্ট্রশন পায়। সম্প্রতি পাঠদানের অনুমতি পাওয়া এরকমই এক কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, তারা সরকারের দেওয়া সকল শর্ত পূরণ করে স্কুলের পাঠদানের অনুমতি পেয়েছেন। তাহলে তাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কেন বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ পাবে না? নন-এমপিওভুক্ত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্তির সাথে সাথে যদি নিজ প্রতিষ্ঠানের নামে শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পায়, তবে কিন্ডারগার্টেন স্কুল কেন পাবে না? কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোকে যদি সুযোগ বঞ্চিতই করা হবে, তবে কেন নিবন্ধন পরিপত্র জারি করেছে সরকার? এই প্রশ্নগুলো অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত এবং এর একটি পরিষ্কার উত্তর সরকারের পক্ষ থেকে আসা উচিত।

কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকরা আরও জানান, কিন্ডারগার্টেন স্কুল কি সরকারের বড় ধরনের সাপোর্ট দিচ্ছে না? একদিকে কিন্ডারগার্টেন স্কুল না থাকলে সারা দেশের কোটি শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়ার মতো সক্ষমতা সরকারের আছে কি? অন্যদিকে দেশের দশ লক্ষাধিক উচ্চশিক্ষিত বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা সরকারের সাহায্য ছাড়াই হচ্ছে। এই দুটি যুক্তিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্ডারগার্টেনগুলো কেবল শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগই দিচ্ছে না, বরং বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করছে। এই দুই ক্ষেত্রেই তারা সরকারের উপর চাপ কমাচ্ছে। এই বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে তাদের প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করা হলে তা দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান উভয় ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এই মুহূর্তে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত এবং মানবিক পদক্ষেপ হলো, কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকভাবে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া। এর পাশাপাশি, পরবর্তী বছরের মধ্যে সরকার একটি সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেবে, যার মধ্যে সকল কিন্ডারগার্টেনকে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ সাপেক্ষে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। স্কুল নিবন্ধন পেলে পরবর্তী বছর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি নিবন্ধনধারী স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও বৃত্তি পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি নিশ্চিত করবে যে, ‘সবার জন্য শিক্ষা’ কথাটি কেবল কাগজে-কলমে নয়, বাস্তবেও প্রতিফলিত হবে।

সরকারের উচিত এই পরিস্থিতিকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখা। একটি কার্যকর ও সুসংগঠিত নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করে সকল কিন্ডারগার্টেনকে একটি কাঠামোর মধ্যে আনা সম্ভব। এতে একদিকে যেমন শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে, তেমনি অন্যদিকে কিন্ডারগার্টেনগুলোর বৈধতাও প্রতিষ্ঠিত হবে। এই মুহূর্তে হঠাৎ করে বৃত্তি পরীক্ষা থেকে শিক্ষার্থীদের বাদ দেওয়াটা কেবল তাদের হতাশই করবে না, বরং তাদের ভবিষ্যৎ শিক্ষার প্রতিও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বৈষম্যহীন একটি সমাজ গঠনে সরকার যখন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তখন প্রাথমিক স্তরে এমন একটি বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের মনে গভীর ক্ষত তৈরি করবে। শিক্ষা যদি মৌলিক অধিকার হয়, তবে এই অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা উচিত নয়, সে যে প্রতিষ্ঠানেই পড়ুক না কেন। এই সংকটময় মুহূর্তে সরকারের দূরদর্শী সিদ্ধান্তই পারে একটি ইতিবাচক ভবিষ্যতের পথ খুলে দিতে, যেখানে প্রতিটি শিশুর শিক্ষার সমান সুযোগ থাকবে।

আলাউল হোসেন: কবি-গীতিকার, সাংবাদিক ও শিক্ষক; সর্বোপরি একজন নন্দনচেতন মানুষ। শিক্ষাব্রতী, প্রতিষ্ঠান-প্রতিষ্ঠাতা, লিটলম্যাগ সম্পাদক, গবেষক ও সাংগঠনিক নেতৃত্বে নীরবে অথচ দৃপ্তপদে গড়ে তুলেছেন পাবনার সাম্প্রতিক সময়ের সাহিত্যিক ভিত্তি। শুধু লেখেন না, মফস্বলের লেখকদের পথ দেখান; ছোটদের হাত ধরে নিয়ে যান সাহিত্যের দ্রুপদী উঠোনে। “বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে” স্নাতকোত্তর। ‌‌“আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট: গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিস ফর ইমপ্লিমেন্টেশন” বিষয়ে ডিপ্লােমা কোর্স সম্পন্ন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হার্ভার্ড এক্স (অনলাইন প্রোগ্রাম) থেকে। পাবনার মাশুন্দিয়া-ভবানীপুর ডিগ্রি কলেজে বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করছেন।

আপনি এই সাইটের কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না