পাবনার কবি ও কবিতা: প্রিয়ম্বদা দেবী

গ্রন্থ সম্পাদনা: আলাউল হোসেন

প্রিয়ম্বদা দেবী
প্রিয়ম্বদা দেবীর জন্ম ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা গ্রামে মাতামহের কর্মক্ষেত্রে। তাঁর পিতা কৃষ্ণকুমার বাগচি। মাতা প্রসন্নময়ী দেবীও একজন কবি ছিলেন। মায়ের সঙ্গে মাতুলালয়েই তাঁর জীবন কেটেছে। প্রখ্যাত সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী ও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি স্যার আশুতোষ চৌধুরী ছিলেন তাঁর মাতুল। প্রিয়ম্বদা বেথুন স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, বেথুন কলেজ থেকে এফ.এ ও ১৮৯২ সালে বি.এ পাশ করেন। ওই বছরেই মধ্য প্রদেশের রায়পুরের আইনজীবী তারাপদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। ১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর স্বামী মারা যান এবং ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর একমাত্র পুত্রও মারা গেলে তিনি সমাজসেবা এবং কাব্যচর্চাকে জীবনের অঙ্গ করেন- হয়ে ওঠেন দুঃখবাদী কবি। ১৯১৫ সালে তিনি ব্রা‏হ্ম বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। দীর্ঘদিন তিনি ভারত-স্ত্রী-মহাম-লের প্রধান ছিলেন। ছাত্রাবস্থাতেই প্রিয়ম্বদার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ভারতী পত্রিকায়। তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘রেণু’-১৯০০ সালে প্রকাশিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই সাড়া পড়ে যায়। কাব্যরচনায় তিনি রবীন্দ্রনাথের সহযোগিতা লাভ করেছিলেন। তাই তাঁর কবিতায় রবীন্দ্রনাথের ছায়া সর্বত্র লক্ষ্য করা যায়। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থ ‘রেণুকা’, ‘তারা’, ‘পত্রলেখা’, ‘অংশু’ ‘চম্পা ও পারুল’। ১৯৩৫ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

প্রিয়ম্বদা দেবীর কবিতা
খেলা

ছেলেদের ছুটোছুটি তট বালুকায়,
হেসে খায় লুটোপুটি; কী কথা রটায়?
ছায়াছবি নেচে ফিরে আলো সাখী সনে,
নীল-পায়রার ঝাঁক ভোরের গগনে।
তারাদল ঘরে-ফেরা পাখি
এক সাথে ওঠে সবে ডাকি
সাঁঝের বেলায়।
লুকোচুরি খেলে ফিরে ফিরে
চাঁদ যে রবিরে ঘিরে ঘিরে
আকাশের গাছের তলায়।
এক খেলা চিরদিন ছেলেদের মত
নাচনের সুর ছাঁদ তেমনি নিয়ত।
এ নিখিলে দেখি বারে বারে
গগনে ভূবনে পারাবারে সকল মেলায়…
সেই সে পাতার বাঁশী বাজে
তেমনি খেলনা সারি রাজে
নীল নভে সাগর বেলায়।
খোলা মাঠে বন ছায়ে তটিনীর তীরে
নাগর-দোলায় কে যে দোলে ফিরে ফিরে।

আপনি এই সাইটের কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না