পাবনার কবি ও কবিতা: মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন

গ্রন্থ সম্পাদনা: আলাউল হোসেন

মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন
মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন ১৯০৪ সালের ৩১ জানুয়ারি পাবনা জেলার মুরারিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন প্রখ্যাত ফোকলোর বিশেষজ্ঞ, লেখক ও শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা করেন। এ সময়ে তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এবং বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে বলিষ্ট ভূমিকা পালন করেন। সর্বশেষ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খ-কালীন অধ্যাপক হিসেবে চাকরি করেন। লোকসঙ্গীতের সংকলন ‘হারামণি’ তাঁর অমর কীর্তি। ১৯৮৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। বাংলা সাহিত্যে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ১৯৬৫ সালে বাংলা একাডেমীর পুরস্কার লাভ করেন।

মুহম্মদ মনসুর উদ্দিনের কবিতা
ললিত চাঁদ

চেতন করে রেখো গুরু, করব ভজন সাধনা
গোঁসাই ললিত চাঁদ বলে আগে জন্মে মা
ভাবতে ভাবতে তাই জন্মিল গুরু পিতার উদ্দেশ পেলেম না।
ঘর ছেড়ে জঙ্গলে গেলেম বনের বাধে খেলনা
ঝাঁপ দিলেম যমুনার জলে, তার মরণ হলো না
বিন্দু বিন্দু সাঁতার জানি তাইতে আবার মলেম না
নদীকূলে তালের গাছ তারির নিচে চিতা
যেদিন মায়-পুত্রে যায় সহমরণে, গুরু সেইদিন জন্মে পিতা।

মেছেল চাঁদ

ওরে ঘর দেখে মরি এ ঘর বেঁধেছে কোন ধনী
দুই খুঁটি পরিপাটা মধ্যে আগুন ন পানি
ঘরের নয় দরজা, দেখতে মজা, বাতাস রয় রাতদিনই
ওরে বাতাস বন্দ হলে সে ঘর থাকবে না, তা জানি।
সে ঘর আগুনে পোড়ে না, সে ঘর পানিতে পচে না,
বলবো কি আজব লীলা বিধির কী কারখানা,
আমি খুবচী দিয়ে রাখবো সারা ঘরামী মেলে না।
ঘরের মধ্যে ব্যক্তি বহুত জন
কেউ কানা কেউ কানে শোনে না এও তো বিলক্ষণ
আমি মেছেল চাঁদ ঘরে বসে করছি আনাগোনা
সাধের ঘর ফেলে যাবো এও এক ভাবনা
ওরে যে না জানে ঘরের সন্ধান সেও তো এক আধলা কানা
তোরা দিন থাকিতে মুরশিদ ধরে করগে জানা শোনা।

আপনি এই সাইটের কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না