গ্রন্থ সম্পাদনা: আলাউল হোসেন
জিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী
প-িত প্রিয়নাথ সরকার ঝল্যমল্য ক্ষত্রিয় পাঠশালার প্রধান প-িত ছিলেন। সেখানেই বালক জিতেন তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ সমাপ্ত করে বাবা প্রাণনাথ হালদারের সাথে পদ্মা, যমুনা, ইছামতিতে মাছ ধরার পেশায় লেগে যান। লেখাপড়া এখানেই ক্ষান্ত। নৌকায় ঘর-সংসার এবং রাত্রিযাপন। রাতে ঘুমাতে যাবার পূর্বে বালক জিতেন গলা ছেড়ে আপন মনে নিজের রচনা করা গান গাইতেন। তাঁর গানের বাণী আর সুরে ওস্তাদ হরিপদ সরকার মুগ্ধ হয়ে জিতেনকে আপন করে নেন। সেই থেকে ওস্তাদ হরিপদ সরকারের নিকট ধর্মীয়পাঠ, সংগীতচর্চা, জারি ও সারি গান, কবি গান, পালা গান ইত্যাদি বিষয়ে তালিম গ্রহণ করে মাত্র ২৪ বছর বয়সে কবি গানের পালায় নাম লেখান। চৈতন্য গুরু সুধীরচাঁদ তাঁকে গুরুর আসন দিয়ে কাঙ্গাল জিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী নাম প্রদান করেন। তিনি ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ ডিসেম্বর রবিবার বেড়ার নাকালিয়া, সাঁড়াশিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এই বাউল কবি ১৩ জুন ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
জিতেন্দ্রনাথ গোস্বামীর গীতিকবিতা
গুরুর বাড়ি
গুরুর বাড়ি যাবি মনা, গুরুর বাড়ি যাবি মনা
প্রেম জোয়ারে ভাসা ওরে ষোলো দাঁড়ের পানসি খানা ॥
আছে ষোলো জন মাল্লা, জুড়ে দাও দূরের পাল¬া,
গগনে থাকিতে বেলা, আগেই দাও রওয়ানা।
ত্রিবেণীতে রয় প্রবল স্রোত যাইতে হয় উজানা,
মাঝি মাল্ল¬া দুর্বল হলে, তরঙ্গে তরী বাঁচবে না ॥
চৌরাশি ক্রোশ হয় সে রাস্তা, চোর ডাকাতে থোয় না আস্থা
কেড়ে নেয় মালের বস্তা, হইলে আনমনা।
যেজন গুরু নামের ধ্বনি দিয়ে নাম করে সাধনা,
ভক্তের ভক্তির জোরে গুরু এসে হালমাচায় বসে আপনা ॥
সাত সমুদ্র তেরো নদী, আঠারোটি মোকাম গদি
সাড়ে চব্বিশ রয় চন্দ্রাদি, কুঠুরি আটখানা।
ছয়চক্রের উর্ধ্বে হলো গুরুর বারামখানা,
গুরু পাগল সুধীর কয় জিতেন্দ্র দিন থাকিতে দে রওয়ানা ॥
